মানুষ কেন সফল হতে পারেনা ?
মানুষ সফল হতে না পারার অনেক কারণ থাকতে পারে। কিছু সাধারণ কারণগুলির মধ্যে রয়েছে:
ব্যক্তিগত কারণ:
- অস্পষ্ট লক্ষ্য: যদি কারো স্পষ্ট লক্ষ্য না থাকে, তাহলে তারা সফলতার দিকে কাজ করতে পারবে না।
- অপ্রতুল পরিকল্পনা: লক্ষ্য নির্ধারণ করার পরে, সেগুলি অর্জনের জন্য একটি পরিকল্পনা করা গুরুত্বপূর্ণ। পরিকল্পনা না থাকলে, লক্ষ্য অর্জন করা কঠিন হতে পারে।
- অলসতা: অনেকেই কঠোর পরিশ্রম করতে চায় না, যা সফলতার জন্য অপরিহার্য।
- আত্মবিশ্বাসের অভাব: যারা নিজেদের উপর বিশ্বাস করে না, তারা প্রায়শই তাদের লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টা করার আগেই হাল ছেড়ে দেয়।
- ভয়: ব্যর্থতার ভয়, পরিবর্তনের ভয়, বা অন্যের ভয় মানুষকে তাদের পূর্ণ সম্ভাবনায় পৌঁছাতে বাধা দিতে পারে।
বাহ্যিক কারণ:
- অপ্রতুল সুযোগ: সবার কাছে সফল হওয়ার জন্য সমান সুযোগ থাকে না। কিছু মানুষ দারিদ্র্য, বৈষম্য, বা অন্যান্য বাধার সম্মুখীন হয় যা তাদের পূর্ণ সম্ভাবনায় পৌঁছাতে বাধা দেয়।
- প্রতিযোগিতা: সফলতার জন্য প্রায়শই তীব্র প্রতিযোগিতা থাকে।
- ভাগ্য: কখনও কখনও, দুর্ভাগ্য বা অপ্রত্যাশিত ঘটনা মানুষকে তাদের লক্ষ্য অর্জন থেকে বিরত রাখতে পারে।
এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে সফলতা রাতারাতি হয় না। এটি কঠোর পরিশ্রম, অধ্যবসায়, এবং উত্সর্গের ফসল। যারা সফল হতে চায় তাদের অবশ্যই তাদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করতে হবে এবং প্রতিদিন কাজ করতে হবে।
কিছু টিপস যা আপনাকে সফল হতে সাহায্য করতে পারে:
- আপনার লক্ষ্য নির্ধারণ করুন এবং সেগুলি লিখে রাখুন।
- আপনার লক্ষ্য অর্জনের জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করুন।
- কঠোর পরিশ্রম করতে এবং উত্সর্গ করতে প্রস্তুত থাকুন।
- আপনার ভুল থেকে শিখুন।
- কখনোই হাল ছেড়ে দেবেন না।
মনে রাখবেন, সফলতা সবার জন্য আলাদা। আপনার নিজের সংজ্ঞা অনুসারে সফলতা অর্জনের জন্য আপনার নিজের পথ তৈরি করুন।
মানুষ মাত্রই সফল হতে চায়। কেউ ব্যর্থ হতে চায় না। কিন্তু সবাই কি সফল হতে পারে! যদি না পারে; তাহলে কেন পারে না? কেউ কি একবারও সেটা চিন্তা করে!
মনে রাখতে হবে, সফলতা এমনি এমনি আসে না। জীবনে সফল হতে হলে কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে। ছাত্রজীবন থেকে নিজেকে তৈরি করার একটা ব্যাপার থাকে। এবারের লেখায় আমি কিছু কলাকৌশল নিয়ে আলোচনা করব।
এক, সকালে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করতে হবে।
সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করা ভালো। সবুজ প্রকৃতির মাঝে হাঁটা এবং ব্যায়াম শরীরের জন্য খুব উপকারি। সুন্দর জীবন গঠনের জন্য শরীরটাকে ঠিক রাখা জরুরি। অনেকে স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেয় না। শারীরিক কোনো সমস্যা হলে অবহেলা করে। এটা ঠিক নয়।
দুই, সময়ের কাজ সময়েই করতে হবে।
শিক্ষার্থী তো বটেই যে কোনো বয়সের মানুষের উচিত সময়টাকে কাজে লাগানো। সময়ের কাজ সময়ে করা ভালো। ভবিষ্যতের জন্য ফেলে রাখা উচিত না।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিন শেষ করে তাদের পরীক্ষার আগে চাপে পড়তে হয় না। ক্লাসের রুটিন মেনে অনেকেই দিনের পড়া দিনে শেষ করে। এ কারণে ক্লাসে তারা অন্যদের চেয়ে এগিয়ে থাকে।
তিন, সফলতার জন্য চাই ইতিবাচক ভাবনা।
জীবনে সফল হওয়ার জন্য সব সময় ইতিবাচক ভাবনা ভাবতে হবে। কখনোই মনের ভেতরে নেতিবাচক ভাবনাকে স্থান দেওয়া যাবে না। অনেকেই সবকিছুকে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখে। এটা হবে না, ওটা হবে না। এটা করা যাবে না, ওটা করা যাবে না। সবকিছুতেই ‘না’। এই ‘না’ বলার অভ্যাসটা পুরোপুরি ছাড়তে হবে।
চার, দৃষ্টিভঙ্গিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হবে।
অর্ধেক গ্লাসে পানি থাকলে অনেকে বলে, অর্ধেক গ্লাস খালি। আবার অনেক বলে, অর্ধেক গ্লাস ভর্তি। যারা বলল, অর্ধেক গ্লাস খালি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি নেতিবাচক। ভাবতে হবে, অর্ধেক গ্লাস ভর্তি বা পূর্ণ। এটা একটা উদাহরণ মাত্র। দৃষ্টিভঙ্গির ইতিবাচক পরিবর্তন না আনতে পারলে সফলতা অর্জনের পথ মসৃণ হবে না।
পাঁচ, সরলভাবে চিন্তা করা।
অনেকে সবকিছুতে জটিলতা খোঁজে। যে যত বেশি জটিলতা খুঁজবে সে তত বেশি জটিলতায় আবর্তিত হবে। যেকোনো বিষয়কে সরলভাবে চিন্তা করা ভালো। তাতে সব কাজ সহজ হয়ে যায়। চিন্তাকে ইতিবাচক ধারায় এগিয়ে নেওয়া যায়। চিন্তার বিকাশ ঘটে। সফল জীবনের জন্য চিন্তার শক্তি গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ছয়, সৃজনশীল বই বেশি বেশি পড়া।
শিক্ষার্থীদের মনে রাখতে হবে, পাঠ্য বই পরীক্ষায় পাসের জন্য আর সৃজনশীল বই প্রতিযোগিতার বাজারে নিজেকে তৈরি করার জন্য। পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি সৃজনশীল বই বেশি বেশি পড়তে হবে। তাতে জ্ঞানের পরিধি বাড়বে এবং জানার জগত্ বিকশিত হবে।
সাত, ভয়কে জয় করা।
এ প্রসঙ্গে একটি গল্প মনে পড়ে গেলো। একজন লোক, সবকিছুতেই খুব ভয় পেত। এতো ভয় পেত যে, ঘর থেকেই বের হতে চাইত না। তার ধারণা, আকাশটা তো ফাঁকা। হাঁটতে গেলে আকাশ থেকে যদি কিছু মাথায় পড়ে!
সফলতার ক্ষেত্রে বড় বাঁধা হচ্ছে ভয়। ভয়কে জয় করতে হবে। আমি পারি না বা পারব না, এ ধরনের চিন্তা মাথায় আনা যাবে না। অনেকে সাক্ষাৎকার দিতে গেলে ভয়ে থর থর করে কাঁপতে থাকে। যেন বাঘের সামনে পড়েছে। জানা বিষয়ও সে ভুলে যায়। নিজের ভয়, জড়তা নিজেকেই কাটাতে হবে। তা না হলে সফল হওয়া যাবে না।
আট, সজ্জনের সঙ্গে বন্ধুত্ব।
ভালো বন্ধু সফল জীবনের জন্য অনেক বড় ভূমিকা রাখতে পারে। কথায় বলে না, সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস; অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ! ভালো বন্ধুরা সব সময় সুপরামর্শ দিয়ে থাকে। সেটা জীবনে অনেক উপকারে লাগে। দুষ্ট লোকের একটা নেতিবাচক ভাবনা অনেক সময় জীবনকে দুর্বিসহ করে তুলতে পারে।
নয়, ধৈর্য ধারণ করতে শেখা।
কথায় বলে, সবুরে মেওয়া ফলে। ধৈর্য ধারন করলে সুফল পাওয়া যায়। ধৈর্যশীল মানুষকে নাকি সৃষ্টিকর্তাও পছন্দ করে। যেকোনো কাজের সুফল পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
দশ, নিজের কাজকে ভালোবাসতে হবে।
কোনো কাজই ছোট নয়। যার যে কাজ সে কাজটা আন্তরিকতার সঙ্গে করতে হবে। কাজকে ভালোবাসতে হবে। সেই কাজই নিয়ে যাবে উন্নতির শিখরে। কাজকে ভালো না বাসলে একদিন সে ফাঁকি দিয়ে চলে যাবে।