করোনাভাইরাস: কী করবেন, কী করবেন না
করোনাভাইরাস এখনও বিশ্বব্যাপী একটি জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি। নিজেকে এবং অন্যদের সুরক্ষিত রাখার জন্য, নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ:
কী করবেন:
- নিয়মিতভাবে হাত ধোয়া: কমপক্ষে ২০ সেকেন্ডের জন্য সাবান এবং পানি দিয়ে আপনার হাত ধুয়ে ফেলুন, বিশেষ করে:
- হাঁচি বা কাশির পর
- টয়লেট ব্যবহারের পর
- খাবার খাওয়ার আগে
- বাইরে থেকে ফিরে আসার পর
- মাস্ক পরুন: জনসাধারণের স্থানে একটি ভালোভাবে ফিট করা মাস্ক পরুন, বিশেষ করে যখন ভিড় বেশি থাকে।
- সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন: অন্যদের সাথে কমপক্ষে ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন।
- ঘন ঘন আপনার টিকা আপডেট করুন: করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে টিকা নিন এবং আপনার বুস্টার ডোজ নিয়মিতভাবে গ্রহণ করুন।
- অসুস্থ থাকলে বাড়িতে থাকুন: আপনার যদি জ্বর, কাশি, বা শ্বাসকষ্টের মতো লক্ষণ থাকে, তাহলে বাড়িতে থাকুন এবং অন্যদের থেকে দূরে থাকুন।
- পরীক্ষা করান: আপনার যদি করোনাভাইরাসের লক্ষণ থাকে, তাহলে পরীক্ষা করান।
- আপনার ঘর পরিষ্কার রাখুন: নিয়মিতভাবে আপনার ঘরের পৃষ্ঠগুলি জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করুন।
কী করবেন না:
- অসুস্থ ব্যক্তির সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ এড়িয়ে চলুন: যদি কেউ অসুস্থ থাকে, তাদের সাথে কমপক্ষে ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন।
- আপনার মুখ স্পর্শ করবেন না: আপনার হাত ধোয়ার আগে আপনার মুখ, চোখ, नाक স্পর্শ করবেন না।
- ভিড় এড়িয়ে চলুন: যদি সম্ভব হয়, ভিড় এড়িয়ে চলুন।
- অসত্য তথ্য ছড়াবেন না: করোনাভাইরাস সম্পর্কে অসত্য তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকুন।
- নিজেকে চিকিৎসা করবেন না: আপনার যদি করোনাভাইরাসের লক্ষণ থাকে, তাহলে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। এই বিশেষ ধরনের ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে দেশে–বিদেশে উদ্বেগ বাড়ছে। কিন্তু নিজেকে আর নিজের পরিবার, স্বজনদের রক্ষা করতে একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আপনার ভূমিকা কী হওয়া উচিত এ সময়? কীভাবে আপনি পারবেন এই ভাইরাস প্রতিরোধ করতে? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এ বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে কিছু উপদেশ দিচ্ছে। আসুন, জেনে নেওয়া যাক।
১. বারবার হাত ধোয়া
নিয়মিত এবং ভালো করে বারবার হাত ধোবেন (অন্তত ২০ সেকেন্ড যাবৎ)। কেন? এ কথা প্রমাণিত যে সাবান–পানি দিয়ে ভালো করে হাত ধুলে এই ভাইরাসটি হাত থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। হাতে ময়লা বা নোংরা দেখা না গেলেও বারবার হাত ধুতে পারেন। তবে বিশেষ করে হাত ধোবেন অসুস্থ ব্যক্তির পরিচর্যার পর, হাঁচি–কাশি দেওয়ার পর, খাবার প্রস্তুত ও পরিবেশনের আগে, টয়লেট ব্যবহারের পর, পশুপাখির পরিচর্যার পর।
বারবার হাত ধোয়া:
বারবার হাত ধোয়া জীবাণু ছড়ানো রোধ করার সবচেয়ে কার্যকর উপায়গুলির মধ্যে একটি।
কখন হাত ধুতে হবে:
- খাবার খাওয়ার আগে এবং পরে
- শৌচালয় ব্যবহারের পর
- কাশি বা হাঁচি দেওয়ার পর
- মুখ স্পর্শ করার পর
- বাইরে থেকে ফিরে আসার পর
- জীবাণুযুক্ত পৃষ্ঠ স্পর্শ করার পর
কিভাবে হাত ধুতে হবে:
- পানি দিয়ে হাত ভিজিয়ে নিন
- সাবান লাগান এবং হাতের সমস্ত পৃষ্ঠে ঘষুন, আঙুলের ফাঁক এবং নখের নিচেও
- কমপক্ষে ২০ সেকেন্ডের জন্য হাত ঘষুন
- পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন
- শুকনো কাপড় বা টাওয়েল দিয়ে হাত মুছুন
বারবার হাত ধোয়ার গুরুত্ব:
- বারবার হাত ধোয়া জীবাণু ছড়ানো রোধ করে
- এটি বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমায়, যেমন:
- ঠান্ডা
- ফ্লু
- ডায়রিয়া
- খাদ্য বিষক্রিয়া
- শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ
বারবার হাত ধোয়া একটি সহজ অভ্যাস যা আপনার এবং আপনার প্রিয়জনদের সুস্থ রাখতে সাহায্য করতে পারে।
২. দূরে থাকুন
এই সময় যেকোনো সর্দি–কাশি, জ্বর বা অসুস্থ ব্যক্তির কাছ থেকে অন্তত এক মিটার বা ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন। কেন? আর সব ফ্লুর মতোই এই রোগও কাশির ক্ষুদ্র ড্রপলেট বা কণার মাধ্যমে অন্যকে সংক্রমিত করে। তাই যিনি কাশছেন, তাঁর থেকে দূরে থাকাই ভালো। ইতিমধ্যে আক্রান্ত এমন ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন। অসুস্থ পশুপাখি থেকে দূরে থাকুন।
৩. নাক–মুখ স্পর্শ নয়
হাত দিয়ে আমরা সারা দিন নানা কিছু স্পর্শ করি। সেই বস্তু থেকে ভাইরাস হাতে লেগে যেতে পারে। তাই সতর্ক থাকুন। অপরিষ্কার হাত দিয়ে কখনো নাক–মুখ–চোখ স্পর্শ করবেন না।
নাক–মুখ স্পর্শ না করা জীবাণু ছড়ানো রোধ করার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়।
কারণ:
- আমাদের হাত সারা দিন বিভিন্ন জিনিস স্পর্শ করে।
- এই জিনিসগুলিতে জীবাণু থাকতে পারে।
- যখন আমরা আমাদের নাক বা মুখ স্পর্শ করি, তখন আমরা এই জীবাণুগুলিকে আমাদের শরীরে প্রবেশ করতে দিই।
- এই জীবাণুগুলি আমাদের অসুস্থ করে তুলতে পারে।
কখন নাক–মুখ স্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে:
- যখন আপনার হাত নোংরা থাকে
- যখন আপনি অসুস্থ থাকেন
- যখন আপনি জনসাধারণের স্থানে থাকেন
- যখন আপনি কাশি বা হাঁচি দেন
নাক–মুখ স্পর্শ এড়ানোর টিপস:
- আপনার হাত নিয়মিতভাবে ধুয়ে ফেলুন।
- আপনার হাতের কাছে টিস্যু রাখুন।
- যখন আপনার কাশি বা হাঁচি হবে, তখন আপনার মুখ এবং নাক টিস্যু দিয়ে ঢেকে রাখুন।
- টিস্যু ব্যবহারের পরে তা ঠিকভাবে ফেলে দিন।
- আপনার নখ ছোট রাখুন।
- আপনার নাক বা মুখ স্পর্শ করার অভ্যাস ত্যাগ করুন।
নাক–মুখ স্পর্শ না করা একটি সহজ অভ্যাস যা আপনাকে বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে।
৪. কাশির আদবকেতা মেনে চলুন
নিজে কাশির আদবকেতা বা রেসপিরেটরি হাইজিন মেনে চলুন, অন্যকেও উৎসাহিত করুন। কাশি বা হাঁচি দেওয়ার সময় নাক, মুখ রুমাল বা টিস্যু, কনুই দিয়ে ঢাকুন। টিস্যুটি ঠিক জায়গায় ফেলুন।
৫. প্রয়োজনে ঘরে থাকুন
অসুস্থ হলে ঘরে থাকুন, বাইরে যাওয়া অত্যাবশ্যক হলে নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করুন।
৬. খাবারের ক্ষেত্রে সাবধানতা
কাঁচা মাছ–মাংস আর রান্না করা খাবারের জন্য আলাদা চপিং বোর্ড, ছুরি ব্যবহার করুন। কাঁচা মাছ–মাংস ধরার পর ভালো করে সাবান–পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন। ভালো করে সেদ্ধ করে রান্না করা খাবার গ্রহণ করুন। অসুস্থ প্রাণী কোনোমতেই খাওয়া যাবে না।
খাবারের ক্ষেত্রে সাবধানতা:
খাবারের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করা আমাদের সুস্থ থাকার জন্য অত্যন্ত জরুরি।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাবধানতা:
খাবার সংগ্রহ ও সংরক্ষণ:
- পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন বাজার থেকে খাবার কিনুন।
- মাংস, মাছ, ডিম ইত্যাদি পণ্য কাঁচা অবস্থায় কিনে বাড়িতে রান্না করুন।
- খাবার কেনার পর হাত ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।
- ফল ও শাকসবজি ভালোভাবে ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করে খান।
- কাঁচা এবং রান্না করা খাবার আলাদাভাবে সংরক্ষণ করুন।
- খাবার ঢেকে রাখুন যাতে পোকামাকড়, ধুলোবালি এবং জীবাণু না লাগতে পারে।
- ফ্রিজের তাপমাত্রা সঠিক রাখুন।
রান্নার সময়:
- রান্নার আগে হাত ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।
- রান্নার সরঞ্জাম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন।
- মাংস, মাছ, ডিম ইত্যাদি ভালোভাবে রান্না করুন।
- খাবার রান্নার সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।
- পোকামাকড়, ধুলোবালি এবং জীবাণু থেকে খাবার রক্ষা করুন।
খাওয়ার সময়:
- খাওয়ার আগে হাত ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।
- পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পাত্রে খাবার পরিবেশন করুন।
- মাছি-মশার উপদ্রব থেকে খাবার রক্ষা করুন।
- বাইরের খাবার খাওয়ার সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন।
- অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
খাবারের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করে আমরা বিভিন্ন রোগ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি।
৭. ভ্রমণে সতর্ক থাকুন
জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বিদেশভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকুন এবং অন্য দেশ থেকে প্রয়োজন ছাড়া বাংলাদেশ ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করুন। অত্যাবশ্যকীয় ভ্রমণে সাবধানতা অবলম্বন করুন।
৮. অভ্যর্থনায় সতর্কতা
কারও সঙ্গে হাত মেলানো (হ্যান্ড শেক), কোলাকুলি থেকে বিরত থাকুন
অভ্যর্থনায় সতর্কতা অবলম্বন করা আমাদের এবং আমাদের প্রিয়জনদের সুস্থ রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাবধানতা:
- শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখুন: অন্যদের সাথে কমপক্ষে ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন।
- হাত মেলানো এড়িয়ে চলুন: পরিবর্তে, নমস্কার বা অন্য কোন অভ্যর্থনার পদ্ধতি ব্যবহার করুন।
- মাস্ক পরুন: জনসাধারণের স্থানে একটি ভালোভাবে ফিট করা মাস্ক পরুন।
- কাশি বা হাঁচি দেওয়ার সময় আপনার মুখ এবং নাক ঢেকে রাখুন: আপনার কনুই বা টিস্যু ব্যবহার করুন।
- অসুস্থ থাকলে বাড়িতে থাকুন: যদি আপনার জ্বর, কাশি, বা শ্বাসকষ্টের মতো লক্ষণ থাকে, তাহলে অন্যদের থেকে দূরে থাকুন।
- আপনার হাত নিয়মিতভাবে ধুয়ে ফেলুন: সাবান এবং পানি দিয়ে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ডের জন্য আপনার হাত ধুয়ে ফেলুন।
- ঘন ঘন আপনার টিকা আপডেট করুন: করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে টিকা নিন এবং আপনার বুস্টার ডোজ নিয়মিতভাবে গ্রহণ করুন।
অভ্যর্থনায় সতর্কতা অবলম্বন করে আমরা জীবাণু ছড়ানো রোধ করতে এবং নিজেদের এবং অন্যদের সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করতে পারি।
৯. স্বাস্থ্যকর্মীর সাহায্য নিন
এ সময়ে কোনো কারণে অসুস্থ বোধ করলে, জ্বর হলে, কাশি বা শ্বাসকষ্ট হলে দ্রুত নিকটস্থ স্বাস্থ্যকর্মীর সাহায্য নিন। তিনি বিষয়টি গোচরে আনতে ও ভাইরাস ছড়ানো বন্ধে ভূমিকা রাখতে পারবেন। অথবা আইইডিসিআরের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। আইইডিসিআরের হটলাইন নম্বর: ০১৯২৭৭১১৭৮৪, ০১৯২৭৭১১৭৮৫, ০১৯৩৭০০০০১১ এবং ০১৯৩৭১১০০১১।
আপনার যদি কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে, তাহলে একজন স্বাস্থ্যকর্মীর সাহায্য নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
কখন স্বাস্থ্যকর্মীর সাহায্য নেওয়া উচিত:
- আপনার যদি জ্বর, কাশি, বা শ্বাসকষ্টের মতো লক্ষণ থাকে
- আপনার যদি তীব্র ব্যথা বা অস্বস্তি থাকে
- আপনার যদি কোনো দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা থাকে
- আপনার যদি গর্ভবতী হন
- আপনার যদি নিয়মিত চেক-আপের প্রয়োজন হয়
- আপনার যদি কোনো মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে
কোথায় স্বাস্থ্যকর্মীর সাহায্য পাবেন:
- আপনার স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে
- একটি হাসপাতালে
- একটি ক্লিনিকে
- একজন ডাক্তারের চেম্বারে
- একটি টেলিমেডিসিন পরিষেবা মাধ্যমে
স্বাস্থ্যকর্মীর সাহায্য নেওয়ার গুরুত্ব:
- একজন স্বাস্থ্যকর্মী আপনার স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ নির্ণয় করতে পারেন।
- একজন স্বাস্থ্যকর্মী আপনার জন্য সঠিক চিকিৎসা নির্ধারণ করতে পারেন।
- একজন স্বাস্থ্যকর্মী আপনাকে আপনার স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়ার বিষয়ে পরামর্শ দিতে পারেন।
আপনার স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। আপনার যদি কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে, তাহলে দেরি না করে একজন স্বাস্থ্যকর্মীর সাহায্য নিন।
১০. সঠিক তথ্য জানুন
সঠিক তথ্য-উপাত্ত পেতে নিজেকে আপডেট রাখুন। গুজবে কান দেবেন না। আপনার স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসকের কাছে তথ্য জানতে চান।
আপনি যদি বিয়ের ব্যাপারে সিরিয়াস হয়ে থাকেন তবে
লিংকে ক্লিক করে ফ্রী রেজিষ্ট্রেশন করুন
অথবা বিস্তারিত জানতেঃ
Gmail:kabinbd4@gmail.com
01711462618 এ কল করুন ২৪/৭ সার্ভিস