দাম্পত্য জীবনে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা শুধুমাত্র শারীরিক সুস্থতার জন্যই নয়, মানসিক প্রশান্তির জন্যও জরুরি। দীর্ঘস্থায়ী সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য এখানে কিছু টিপস দেওয়া হল:
খাদ্যাভ্যাস:
খাদ্যাভ্যাস ব্যক্তির জীবনে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক, যা তার শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে। সুস্থ খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করা মোটেও করা সহজ নয়, কিন্তু এটি দুর্বল দেহ, উন্নত মানসিক স্বাস্থ্য, এবং প্রবৃদ্ধির জন্য মাধ্যম হতে পারে।
সুস্থ খাদ্যাভ্যাস করার উপায়:
- প্রস্তুতি করুন:
- খাদ্যাভ্যাস শুরু করার আগে আপনি একটি পরিকল্পনা তৈরি করতে পারেন। এটি নিজেকে সুস্থ ও সম্মত খাদ্য বেছে নেওয়ায় সাহায্য করতে পারে এবং বিশেষভাবে বিদ্যমান পণ্যের সাথে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করতে পারে।
- বিভিন্ন খাবার ধরন প্রয়োগ করুন:
- একই ধরনের খাদ্যে নতুন ধরনের খাদ্য প্রবেশ করান। বিভিন্ন রঙ, রুচি, এবং স্বাদের সাথে সম্মিলিত একটি প্রকার খাদ্য খাওয়া হোক।
- সহায়কারী খাদ্য পণ্য ব্যবহার করুন:
- ফল, সবজি, দারুচিনি, হাঁড়ি, মৌরি, ওয়ালনাট, ইত্যাদি যে খাদ্য দ্বারা আপনি নিজেকে সমর্থন করতে পারেন, তা ব্যবহার করুন।
- বিতর্কিত খাদ্য পণ্য এবং পরিমাণ কন্ট্রোল করুন:
- জানুন কোন খাদ্য কোনও সময়ে এবং কত পরিমাণে কাজ করতে সাহায্য করতে পারে এবং নিজেকে সীমাবদ্ধ করুন।
- প্রতিটি খাদ্যের কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, এবং চর্বি থাকতে হবে:
- একটি সুস্থ মিশ্রণ পেতে নিজেকে প্রতিটি খাদ্যে বিভিন্ন ধরনের পোষক উপাদান প্রদান করা গুরুত্বপূর্ণ।
- পর্যাপ্ত পানি পান করুন:
- প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং সুস্থ হতে সাহায্য করতে পারে।
- আত্মনিরীক্ষণ করুন:
- খাদ্য খাওয়ার পরে নিজেকে আত্মনিরীক্ষণ করুন এবং মন্তব্য করুন যে কি খাচ্ছেন এবং তা কতটুকু খাচ্ছেন।
- উপভোগ করুন:
- খাদ্য খাওয়া একটি আনন্দমুলক অভিজ্ঞান হতে পারে, তাই সুস্থ খাদ্য বেছে নিতে এবং এর সহোজ মূল্যায়ন করতে হবে।
এই উপায়গুলির মাধ্যমে সুস্থ খাদ্যাভ্যাস করতে পারেন এবং তাদের জীবনের জন্য স্থিতিশীল এবং সুস্থ খাদ্য প্রয়োজন।
- সুষম খাবার: স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখার জন্য সুষম খাবার খাওয়া অপরিহার্য। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ফল, শাকসবজি, বাদাম, বীজ, শস্য এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন।
- প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন: প্রক্রিয়াজাত খাবারে প্রায়শই অতিরিক্ত চিনি, লবণ এবং অস্বাস্থ্যকর চর্বি থাকে যা ওজন বৃদ্ধিতে অবদান রাখে।
- পানি পান করুন: পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- অতিরিক্ত খাওয়া এড়িয়ে চলুন: অতিরিক্ত খাওয়া ওজন বৃদ্ধির প্রধান কারণ। মনোযোগ সহকারে খাবার খান এবং আপনার শরীরের ক্ষুধার ইঙ্গিতের প্রতি মনোযোগ দিন।
শারীরিক Activity:
- নিয়মিত ব্যায়াম: নিয়মিত ব্যায়াম ওজন কমাতে এবং স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন অন্তত 30 মিনিট ব্যায়াম করার লক্ষ্য রাখুন।
- সক্রিয় থাকুন: দিনের বেলায় সক্রিয় থাকার চেষ্টা করুন। লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি ব্যবহার করুন, হাঁটাচলা বৃদ্ধি করুন এবং দীর্ঘ সময় বসে থাকা এড়িয়ে চলুন।
মানসিক দিক:
- মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ: মানসিক চাপ অতিরিক্ত খাওয়া এবং ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। ধ্যান, যোগব্যায়াম এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়ামের মাধ্যমে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন।
- পর্যাপ্ত ঘুম: ঘুমের অভাব ওজন বৃদ্ধির সাথে সম্পর্কিত। প্রতি রাতে 7-8 ঘণ্টা ঘুমের চেষ্টা করুন।
দাম্পত্য জীবনে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কিছু অতিরিক্ত টিপস:
- একে অপরকে সমর্থন করুন: দম্পতিরা একে অপরকে ওজন নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করতে পারে। একসাথে স্বাস্থ্যকর খাবার খান, ব্যায়াম করুন এবং একে অপরকে অনুপ্রাণিত করুন।
- প্রতিযোগিতা তৈরি করুন: ওজন কমানোর জন্য একটি মজার প্রতিযোগিতা তৈরি করুন। কে সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি ওজন কমাতে পারে তা দেখুন।
শীতের মৌসুমে আমাদের দেশে বিয়ের ধুম লাগে। আর বিয়ে হয়েছে এমন দম্পতির মধ্যে প্রায়ই ওজন বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়।
বিয়ের পরও বাড়তি ওজন কমিয়ে যদি ঝরঝরে ফিট আর সুন্দর ফিগারেই থাকতে চান তবে যা করতে হবে:
বিয়ের পর নতুন বউয়ের জন্য অনেকেরই অভ্যেস আছে প্রতিদিন বাড়ি ফেরার সময় বাইরের মুখরোচক খাবার নিয়ে আসেন। এসব তেলে ভাজা বা ফাস্টফুড খাবারের পরিবর্তে সন্ধ্যায় একবাটি ফল কেটে দু’জন মিলে খেতে পারেন।
বাইরের খাবার যদি খুব পছন্দের হয় তবে ছুটির দিনে রাতে একসঙ্গে বাইরে গিয়েই খান। বাইরে গিয়ে খাবারের অর্ডার দেওয়ার সময় যতটুকু খাবার তৃপ্তি নিয়ে খেতে পারবেন ততটুকুই অর্ডার করুন।
মেইন ডিস আসার আগে সালাদ এবং ক্লিয়ার সুপ খেয়ে নিন। ডেজার্ট খেতে চাইলে একটি আইটেম নিয়ে ভাগ করে খান। ঘরে বা বাইরে খাবার যতই পছন্দের হোক না কেন, নিজের ইচ্ছা বা কারও অনুরোধে অতিরিক্ত খাবেন না।
নিজের এবং পরিবারের সুস্বাস্থ্য রক্ষার দায়িত্ব কিন্তু আমাদের। তাই বাড়ির রান্না স্বাস্থ্যসম্মত করতে রান্নায় তেলের পরিমাণ কমিয়ে দিন। মাংসের পরিবর্তে মাছের ওপর নির্ভরতা বাড়ান। আর প্রতিবেলায় খাবারে প্রচুর শাক-সবজি রাখুন। সুস্বাস্থের বিষয়টি সামনে আনতে পারলে দেখবেন পরিবারের অন্যরা ঝামেলা ছাড়া এগুলো খেয়ে আপনাকে এবিষয়ে সাহায্যই করবে।
একটি মজার বিষয় হচ্ছে নারীরা যখন বাইরে খান তখন খাবার ছোট পরিমাণে মুখে দেন এবং খুব ধীরে ধীরে অনেক সময় নিয়ে খান। এতে তাদের পরিমাণের চেয়ে কম খাবার খেলেও পেট ভরে যায়। কারণ আমরা যখন খুব দ্রুত খেতে থাকি তখন পেট ভরে যাওয়ার সংকেত আমাদের মস্তিস্কে পৌঁছতে বেশি সময় লাগে। এজন্য বেশি খাবার খাওয়া হয়। ধীরে ধীরে খেলে অনেক বেশি পরিমাণে খাবার খাওয়ার স্পৃহা থাকে না বলেই বিশেষেজ্ঞরা পুরুষদেরও এমন নারীর মতো করেই খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
বাড়তি ওজন মানেই হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, রক্তে কলেস্টরেলের মাত্রা বেড়ে যাওয়া, হতাশার মতো নানা ঝামেলা সব মিলে আমাদের মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যায়।
শরীরের সুস্থ্ থাকতে এবং ওজন ঠিক রাখতে প্রথমে খাবার নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি তারপর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে নিয়মিত অন্তত আধাঘণ্টা ব্যায়াম করা।
বিয়ের পর প্রিয়জনকে খাবার খাওয়াতে যেমন যত্নশীল আমরা, তার সুস্বাস্থ্যের দিকেও লক্ষ্য রাখুন।
best marriage media in bangladesh